শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৪৪ পূর্বাহ্ন
 
 স্টাফ রিপোর্টার, ঈশ্বরদী থেকে॥
পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) আসনে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ উপ-নির্বাচনের ১২৯ কেন্দ্রের চুড়ান্ত ফলাফল ঘোষনা করা হয়েছে। আওয়ামীলীগের নৌকার প্রার্থী বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নুরুজ্জামান বিশ্বাস ২৩৮৫৮৪ ভোট পেয়ে চুড়ান্ত ভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ধানের শীষের প্রার্থী খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব পেয়েছেন ৫৬৭৭ ভোট। জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের রেজাউল করীম খোকন ২৪৭০ ভোট পেয়েছেন। গত ২ এপ্রিল প্রয়াত ভুমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ এমপির মৃত্যুর পর আসনটি শ্যূণ্য ঘোষণা করা হয়। এরপর আওয়ামীলীগ নেতাদের মধ্য থেকে ২৮ জন নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশি হয়ে মাঠে কাজ করেন। অবশেষে আওয়ামীলীগের হাইকমান্ড থেকে আলহাজ্ব নুরুজ্জামান বিশ্বাসকে মনোনয়ন দেওয়া হলে সকল মনোনয়ন প্রত্যাশিরা তাকে সমর্থন করে নৌকার বিজয়ের জন্য মাঠে নেমে কাজ শুরু করেন।
নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফশিল অনুযায়ি শনিবার সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) আসনে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। মোট ১২৯ ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হয়। এই আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৮১ হাজার ১১২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৯১ হাজার ৬’শ ৯৭ জন এবং মহিলা ভোটারের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৮৯ হাজার ৪’শ ১৫ জন। ভোট গ্রহণ কাজে ২ হাজার ৩’শ ১ জান প্রিজাইডিং ও পুলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করেন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই পাবনা-৪ আসনের ১২৯ ভোট কেন্দ্র প্রস্তত করা হয় শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহনের জন্য। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠান সম্পন্নের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকেও ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়। পাবনা-৪ নির্বাচনী এলাকায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় র্যাবের ৪ টি টহল দল, ৭ প্লাটুন বিজিবি, ৮ টি স্ট্রাইকিং ফোর্সদল ও ৪ টি রিজার্ভ স্ট্রাইকিং ফোর্স দল, পুলিশের ৬ সদস্য করে গঠিত ২১ টি মোবাইল দল, ১৫৪৮ জন আনসার ভিডিপি সদস্যসহ পুলিশের মোট ১০৫৮ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করেন। এদের মধ্যে ১ জন এসপির নেতৃত্বে ৬ জন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ৩ জন এএসপি ও ৪০ জন ইনসপেক্টর দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া পাবনা জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ, জেলা রিটার্নিং অফিসার আব্দুল লতিফ, ২ জন সহকারী রিটার্নিং অফিসার, ২ জন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ২ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট এবং ১৮ জন ম্যাজিষ্ট্রেট দায়িত্ব পালন করেন।
সকাল সাড়ে নয়টার দিকে আওয়ামীলীগ প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান বিশ্বাস ভোট দেন ঈশ্বরদী সরকারী কলেজ কেন্দ্রে। ভোট প্রদান শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সকাল থেকেই ভোটাররা স্বতঃফুর্তভাবে ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ভোট প্রদান করছেন। ভোট কেন্দ্রে আসতে কোন বাধা নেই। বিএনপির প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব কোন কেন্দ্রে এজেন্টই দেননি অথচ আমার মনে হয় হাবিবুর রহমান হাবিব মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে বলেন, কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এলাকায় বিএনপির সমর্থন না থাকায় বিএনপির প্রার্থী বিভিন্ন কেন্দ্রে এজেন্টই দিতে পারেননি। এ অবস্থায় তিনি মিথ্যা কথা বলে নির্বাচনকে প্রশ্ন বিদ্ধ করেন।
অপরদিকে, বিএনপি প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব কোন ভোট কেন্দ্রে না গিয়ে এবং ধানের শীষে নিজের ভোটটি না দিয়ে আওয়ামীলীগ প্রার্থীর নেতাকর্মী ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন বিভিন্ন গনমাধ্যম কর্মীদের নিয়ে। সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে তিনি বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও হয়রানী করায় নির্বাচনের সুষ্ঠ পরিবেশ বিনষ্ট হয়। এ কারণে আমি নিজেও ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে যায়নি। পরিশেষে হাবিব বলেন, আমি এই নির্বাচন বাতিল করে পুন:নির্বাচনের দাবি করছি